প্রিয় শিক্ষার্থী ই-ভিশন বিডি'র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। স্কুল বন্ধ তবুও ভালই ব্যস্ত সময় যাচ্ছে তোমাদের। ৫ম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান নিয়ে চলে আসলাম। আমরা সবসময় বাছাই করা নির্ভুল সমাধান দিতে চেষ্টা করি।
তোমার তোমাদের মতো করে সাজিয়ে লিখে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিবে।
বিষয়: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা
বিষয় কোড: ১৫৩
ক . নং প্রশ্নের উত্তর
উত্তরঃ প্রাচীনকালে বাংলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলগুলোর নাম দেওয়া হয়েছিলো জনপদ। চতুর্থ শতক হতে গুপ্ত যুগ, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন প্রভৃতি আমলের উল্কীর্ণ শিলালিপি ও সাহিত্যে প্রাচীন বাংলার ১৬টি জনপদের নাম পাওয়া যায় (বাংলায় ছিলো ১০টি) যথা-
পুণ্ড্রঃ বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অবস্থানভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল পুণ্ড্র জনপদ।
বঙ্গঃ- কুষ্টিয়া , যশোর , নদীয়া , ঢাকা , ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছিল ।
সমতটঃ- কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছিল।
হরিকেলঃ- পার্বত্য চট্টগ্রাম , চট্টগ্রাম , ত্রিপুরা ও সিলেট নিয়ে গড়ে উঠেছিল।
গৌড়ঃ- চাঁপাইনবাবগঞ্জ , নওগ, মালদহ ও পশ্চিম দিনাজপুর নিয়ে গড়ে উঠেছিল।
বরেন্দ্রঃ- বগুড়া, পাবনা ও রাজশাহীর অংশবিশেষ নিয়ে গড়ে উঠেছিল।
এছাড়াও চন্দ্রদ্বীপ, রাঢ় ইত্যাদি উল্লেখ যোগ্।
নিচে চিত্রের মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার জনপদ গুলো দেখানো হলো-
চিত্রঃ প্রাচীন বাংলার জনপদ |
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর
প্রাচীন জনপদ গুলাের গুরুত্বঃ
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রাচীন জনপদ গুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাচীনযুগে বাংলা নামে কোনো অখণ্ড রাষ্ট্র ছিল। বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন বঙ্গ, পুণ্ড্র, গৌড়, হরিকেল, সমতট, বরেন্দ্র এরকম প্রায় ১৬ টি জনপদে বিভক্ত ছিল। বাংলার বিভিন্ন অংশে অবস্থিত প্রাচীন জনপদগুলোর সীমা ও বিস্তৃতি সঠিকভাবে নির্ণয় করা অসম্ভব। কেননা বিভিন্ন সময়ে এসব জনপদের সীমানা হ্রাস অথবা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে প্রাচীনতম হলো পুণ্ড্র।
'কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র’ গ্রন্থে গৌড় জনপদের শিল্প ও কৃষিজাত দ্রব্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। হর্ষবর্ধনের শিলালিপি হতে প্রমাণিত হয় যে, সমুদ্র উপকূল হতে গৌড় দেশ খুব বেশি দূরে ছিল না প্রাচীন বাংলায় কোনো রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। শক্তিশালী শাসকগণ তাদের আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে একাধিক জনপদের শাসন ক্ষমতা লাভ করতেন। এভাবে জনপদগুলো প্রাচীন বাংলায় প্রথম ভূখণ্ডগত ইউনিট বা প্রশাসনিক ইউনিট হিসাবে ভূমিকা পালন করে পরবর্তীতে রাজনৈতিক ঐক্য গঠনে সহায়তা করেছিল।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর
প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের ধারণাঃ
ইতিহাস বিষয়ক আলোচনায় বিভাজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে এ যুগ বিভাজন নির্ণয় করা হয়ে থাকে। ঐতিহাসিকগণ খ্রিষ্টপূর্ব পাঁচ শতক থেকে খ্রিষ্টীয় তেরো শতক পর্যন্ত সময়কালকে বাংলার ইতিহাসের প্রাচীন যুগ বলে মনে করেন।
আবার কেউ কেউ খ্রিষ্টপূর্ব পাঁচ শতক থেকে খ্রিষ্টীয় ছয় শতক পর্যন্ত সময়কালকে আদি ঐতিহাসিক যুগ এবং খ্রিষ্টীয় সাত শতক থেকে তেরো শতক পর্যন্ত সময়কালকে প্ৰাক-মধ্যযুগ বলেও যুগ বিভাজন করে থাকেন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর
উত্তরঃ আমার বর্তমান নিজ জেলা যে জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল তা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো: আমার বর্তমান নিজজেলা ঢাকা। ঢাকা ছিল প্রাচীন বাংলার বঙ্গ জনপদের অন্তর্ভুক্ত। বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, বরিশাল, পাবনা, ফরিদপুর নোয়াখালী, বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালীর নিম্ন জলাভূমি এবং পশ্চিমের উচ্চভূমি যশোর, কুষ্টিয়া, নদীয়া, শান্তিপুর ও ঢাকার বিক্রমপুর সংলগ্ন অঞ্চল ছিল বঙ্গ অপঠান আমলে সমগ্র বাংলা বঙ্গ নামে ঐক্যবদ্ধ হয়। পুরানো শিলালিপিতে ‘বিক্রমপুর’ ও ‘নাব্য' নামে দুটি অংশের উল্লেখ রয়েছে।
প্রাচীন বঙ্গ ছিল একটি শক্তিশালী রাজ্য। 'ঐতরেয় আরণ্যক' গ্রন্থে বঙ্গ নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। এছাড়া মহাভারতে এবং কালিদাসের ‘রঘুবংশ’ গ্রন্থে ও ‘বঙ্গ’ নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
Post a Comment
0 Comments