ইবনে বতুতার বাংলাদেশ ভ্রমণ
মরক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতা ১৩৪৬ সালে বাংলাদেশ সফর করেন। বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য তিনি নিজেই তার ভ্রমণকাহিনী ‘আর রিহলা'তে উল্লেখ করেছেন এবং তা ছিল কামরূপের পার্বত্য অঞ্চলের (সিলেট) বিখ্যাত সুফিসাধক শেখ জালালউদ্দিনের (হযরত শাহজালাল মুজারদ-ই-ইয়েমেনি) দর্শন লাভ।
ইবনে বতুতা ১৩২৫ সালে একুশ বছর বয়সে বিশ্ব
সফরে বের হন। ১৩৩৪ সালে তিনি দিল্লিতে পৌছেন। সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলক তাকে দিল্লির
কাজী নিযুক্ত করেন। প্রায় আট বছর তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। এরপর সুলতান তাকে চীনে রাষ্ট্রদূত
করে পাঠান (১৩৪২)।
পথে জাহাজডুবির ফলে তিনি বাংলা অভিমুখে
রওনা হন। জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রাচুর্য ও মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য বাংলাকে
বসবাসের জন্য খুবই আকর্ষণীয় করে তুললেও, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া (মেঘাচ্ছন্ন ও গুমোট
আবহাওয়া) এবং তার সঙ্গে ভ্যাপসা গরম বিশেষত গ্রীষ্মকালে নদীনালা থেকে উদ্ভূত দাবদাহ
এতটাই পীড়াদায়ক ছিল যে, খোরাসানিরা (বিদেশিরা) একে 'দোজখ-ই-পুর নিয়ামত' অর্থাৎ প্রাচুর্যপূর্ণ
নরক বলে অভিহিত করত।
ইবনে বতুতা তা যথার্থ বলেই মনে করেছেন। দেশে খাদ্যশস্যের প্রাচুর্য এবং দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্যের সস্তা দর উল্লেখ করে তিনি বলেছেন যে, পণ্যের এমন প্রাচুর্য ও সস্তা দর তিনি পৃথিবীর আর কোথাও দেখেননি।
Post a Comment
0 Comments