Type Here to Get Search Results !

বাংলা ব্যাংকরণ: বাংলা ভাষার উদ্ভব ‍ও বিকাশ

 

বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ

বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ

  • ·       মানুষের মুখে উচ্চারিত অর্থবোধক ও মনোভাব প্রকাশক ধ্বনি সমষ্টিকে বলে- ভাষা।
  • ·       মনের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম-ভাষা।
  • ·       ভাষার মূল উপাদান ধ্বনি।
  • ·       বর্তমানে পৃথিবীতে ভাষা প্রচলিত আছে সাড়ে তিন হাজারের উপরে।
  • ·       প্রায় ২৪ কোটি লোকের মুখের ভাষা বাংলা।
  • ·       বাংলা ভাষার বয়স প্রায় ১০০০ বছর [মাগধী ও গৌড়ী প্রাকৃত অনুসারে]। 
  • ·       ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ও জর্জ গ্রিয়ারসনের মতানুসারে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে — মাগধী প্রাকৃত থেকে ৷ 
  • ·       মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ মনে করেন, বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে গৌড়ী প্রাকৃত থেকে।
  • ·       বাংলা ভাষার জন্ম বঙ্গ-কামরূপী ভাষা থেকে।
  • ·       ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, বাংলা ভাষার উৎসকাল ৭ম শতক।
  • ·       ভাষাভাষী জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলা বিশ্বের ৭ম ভাষা। 
  • ·       বাংলা ভাষা বিশেষভাবে প্রভাবিত — দ্রাবিড় ও কোল অনার্যভাষা দ্বারা।
  • ·       বাংলা ভাষার আদি উৎস ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা।
  • ·       পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষার রূপ দুটি লিখিত ও কথ্য।
  • ·       তৎসম শব্দ বেশি থাকেভাষায়৷
  • ·       সর্বপ্রথম সাধু ভাষা ব্যবহার করেন রাজা রামমোহন রায়।
  • ·       বাংলা ভাষা যে বংশ থেকে এসেছে ইন্দো-ইউরোপীয় (শতম শাখা)।
  • ·       ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের শাখা দুটি কেন্তুম ও শতম।
  • ·       বাংলার আদি অধিবাসীগণ অস্ট্রিক ভাষাভাষী ছিল।
  • ·       প্রাকৃত শব্দটির অর্থ– স্বাভাবিক।
  • ·       বাংলা ভাষা ও সাহিত্য প্রত্যক্ষভাবে ঋণী অপভ্রংশের কাছে।
  • ·       উত্তরাপথের ‘Lingua Franca’ বলা হতো শৌরসেনী ভাষাকে৷
  • ·       মিথিলা ও বাংলার মিশ্র ভাষাই– ব্রজবুলি ভাষা।
  • ·       সহোদর ভাষাগোষ্ঠী বলা হয় বাংলা ও অসমিয়াকে।

 

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে বাংলা ভাষা উদ্ভবের ইতিহাস

·      

ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা ৫০০০ খ্রি. পূর্ব _শতম (৩৫০০ খ্রি. পূর্ব)আর্য (২৫০০ খ্রি. পূর্ব) _ভারতীয় (১২০০ খ্রি. পূর্ব) _প্রাচীন ভারতীয় আর্য _প্রাচীন ভারতীয় কথ্য আর্য (আদিম প্রাকৃত ৮০০ খ্রি. পূর্ব) _প্রাচীন প্রাচ্য (৪০০ খ্রি. পূর্ব)  _গৌড়ী প্রাকৃত (২০০ খ্রি. পূর্ব) _বঙ্গ-কামরূপী (৫০০ খ্রি.) _গৌড়ী অপভ্রংশ (৪০০-৬০০ খ্রি.) _বাংলা ৬৫০ খ্রি(alert-success)

 

বাংলা ভাষার উদ্ভব সম্পর্কে ভাষাবিদদের মন্তব্য

  • ·       ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ঃ বাংলা ভাষার উদ্ভব মাগধী প্রাকৃত ভাষা থেকে
  • ·       ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়সহ অধিকাংশঃ বাংলা ভাষা উদ্ভবের সময় খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীতে।
  • ·       ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ঃ বাংলা ভাষার আদিস্তরের স্থিতিকাল দশম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী।
  • ·       ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহঃ বাংলা ভাষার উদ্ভব গৌড়ী প্রাকৃত ভাষা (মাগধী প্রাকৃতের প্রাচ্যতর রূপ)।
  • ·       ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহঃ বাংলা ভাষা উদ্ভবের সময় খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে।
  • ·       ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহঃ বাংলা ভাষার আদিস্তরের স্থিতিকাল সপ্তম-দ্বাদশ শতাব্দী।


সাধু ও চলিত ভাষার বিকাশ

মানুষের ভাব ও চিন্তাকে ধ্বনির মাধ্যমে প্রকাশ করার পদ্ধতি হলো ভাষা। চলিত ভাষা পৃথিবীর সব দেশেই সাহিত্যের ভাষা এবং লোকপ্রচলিত ভাষার মধ্যে কিছু না কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। বাংলা ভাষাও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলা ভাষার স্বরূপ পর্যালোচনা করলেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠবে।


বাংলা ভাষার দুটি রূপ

  • ক) লৈখিকঃ i) সাধু ও ii) চলিত
  • খ) মৌখিকঃ i) চলিত বা কথ্য ও ii) উপভাষা (আঞ্চলিক)


সাধু ও চলিত ভাষা

  • ·       লৈখিক ভাষার রূপ ২ টি (সাধু ভাষা ও চলিত ভাষা)।
  • ·       সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য- ক্রিয়া ও সর্বনাম পদের ব্যবহারে (চলিত ভাষায় সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ সংক্ষেপিত থাকে)।
  • ·       সাধু ও চলিত ভাষায় অভিন্ন রূপে ব্যবহৃত হয়— অব্যয়।
  • ·       অঞ্চলভিত্তিক বা আঞ্চলিক ভাষাকে বলা হয় কথ্য বা উপভাষা।


সাধু ভাষা

  • ·       সাধু ভাষা পরিভাষাটি প্রথম ব্যবহার করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
  • ·       বাংলা গদ্যের প্রথম যুগে প্রচলন ছিল সাধুরীতির।
  • ·       বাংলা ভাষার যে রীতি সুনির্ধারিত ব্যাকরণের অনুসারী সাধুরীতি।
  • ·       যে ভাষারীতির পদবিন্যাস সুনিয়ন্ত্রিত ও সুনির্দিষ্ট সাধুভাষা।
  • ·       সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্য এটি তৎসম শব্দবহুল এবং সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ বিশেষ করিতেছিল গঠন পদ্ধতি মেনে চলে।
  • ·       গুরুগম্ভীর ও আভিজাত্যের পরিচায়ক— সাধু ভাষা।
  • ·       নাটকের সংলাপ, বক্তৃতা ও আলাপ আলোচনায় অনুপযোগী সাধু ভাষা।
  • ·       সাধু ভাষার প্রচলন স্তিমিত হয় বিংশ শতাব্দীতে।

 

চলিত ভাষা

  • ·       বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতির রূপকার, স্রষ্টা ও প্রথম ব্যবহারকারী- প্রমথ চৌধুরী।
  • ·       বর্তমানে সর্বজনস্বীকৃত ভাষা চলিত ভাষা ।
  • ·       চলিত ভাষার রীতি পরিবর্তনশীল।
  • ·       চলিত ভাষার বিশেষ বৈশিষ্ট্য – তদ্ভব শব্দবহুলতা।
  • ·       ভাগীরথী নদীর তীরবর্তী মানুষের ভাষা মূলত— চলিত ভাষা।
  • ·       প্রমথ চৌধুরী যে বিষয়ে রবীন্দ্রনাথকে প্রভাবিত করেছিলেন চলিত ভাষার ব্যবহার।
  • ·       চলিত ভাষাকে জনপ্রিয় করেন প্রমথ চৌধুরী।


সাধু ও চলিত রীতির ক্রিয়া ও সর্বনাম পদের পার্থক্য

সাধু ও চলিত ভাষার মূল পার্থক্য হলো ক্রিয়া ও সর্বনামের পার্থক্যের মধ্যে। সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়া সাধু রীতিতে পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয় । কিন্তু চলিত রীতিতে ব্যবহৃত হয় সংক্ষেপে। তেমনি সাধু ভাষায় সর্বনাম পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হলেও চলিত রীতিতে ব্যবহৃত হয় সংক্ষেপে।(alert-success)

 

নিচে পার্থক্য দেখানো হলো:

ক্রিয়া

সর্বনাম

সাধু

চলিত

সাধু

চলিত

 আসিও   

এসো 

আমাদিগকে 

আমাদেরকে 

আসিয়াছিল

এসেছিল

ইহাকে 

একে 

 করিলাম

করলাম 

উহাকে 

ওকে 

 করিতেছিল

করছিল 

তাহার 

তার 

 গিয়াছিল

গিয়েছিল 

তাহাদের 

তাদের 

যাইতেছে

যাচ্ছে 

যাহাদের 

যাদের     

হাঁটিতেছে

হাঁটছে

যাহা

যা

 

শব্দ(বিশেষ্য ও বিশেষণ)

সাধু

চলিত

গাছুয়া

গেছো

গৃহ

ঘর

পাথুরিয়া

পাথুরে

ব্যাঘ্র

বাঘ

মস্তক

মাথা

সর্প

সাপ


আমাদের পরবর্তী পোষ্ট পেতে আমাদের ফেইজবুক পেইজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন। 
আমাদের ফেইজবুক পেইজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন। 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad