প্রযুক্তি

Type Here to Get Search Results !

ই-পাসপোর্টের আদ্যোপান্ত


যারা ই পাসপোর্ট করতে চান তাদের প্রতি ছোট কয়েকটা গাইড লাইন:

বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে ই-পাসপোর্ট এর যুগে। ই পাসপোর্ট করতে কখনোই কোন অবস্থাতেই কোন দালালের সরনাপন্ন হবেন না। কেনোনা এই ডিজিটাল ব্যপারটায় দালালের কিছুই করার আর নেই। তাই নিজের টা নিজে করুন।

এটা কোন রকেট সাইন্স নয় যে নিজেরটা নিজে পারবেন না। আপনার পরিবারেরটাও আপনি নিজে করতে পারবেন। 

এম আর পি থেকে ই পাসপোর্ট করা আর নতুন ভাবে ই পাসপোর্ট করার ফর্মালিটি একই। এম আর পি পাসপোর্ট থাকলে শুধু এর ডাটা গুলো ভুল না করে সঠিক ভাবে নতুন আবেদনে উল্লেখ করুন।

একটা বিষয় মাথায় রাখবেন ই পাসপোর্ট করতে যে সাপরটিং পেপার লাগে তা অবশ্যই আবেদনের পূর্বেই নিজের কাছে সংগ্রহে রাখুন, যেন কোন অবস্থাতেই আপনার আবেদিন টা পরিপূর্ণ করতে কোন রকম ঝামেলায় পড়তে না হয়।

কি কি ডকুমেন্ট লাগবে?

(ক) আপনার বয়স যদি ১৮  থেকে ২০ বছরের মাঝে হয়, তবে NID অথবা ১৭ ডিজিটের ভেরিফাইড Birth Certificate. ২০ বছরের উপর হলে অবশ্যই NID লাগবে।

(খ) পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে তার যে পেইজে ডাটা রয়েছে সেই পাতাটির ফটোকপি।

(গ) যারা বিবাহিত তাদের কাবিন নামার কপি। 

(ঘ) ১৮ বছরের নিচে হলে বাবা-মা এর NID এর কপি। 

(অ) ৬ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গ্রে-বেকগ্রাউন্ডের উপর পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি।

(আ) ১৫ বছরের নিচের বাচ্চাদের জন্য তাদের বাবা-মা এর পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 

ই পাসপোর্টের জন্য এই সব কাগজের কোন কিছুই সত্যায়িত করার প্রোয়োজন নেই। তবে যেদিন এপয়েন্টমেন্ট তারিখে আপনারা পাসপোর্ট অফিসে যাবেন সেদিন এই সকল কপির মূল বা আসল কপির সেট অবশ্যই সাথে নিয়তে হবে। 

কি ভাবে আবেদন করবেন?

প্রথমেই একটি বৈধ ই মেইল আইডি থেকে epassport.gov.bd এই লিংকে গিয়ে নির্দেশনা মোতাবেক আপনার একটা account খুলুন। একাউন্ট খুলতে আপনার একটা সচল বৈধ মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করুন যা সব সময় আপনার নিজের কাছে থাকবে। account খোলার সময় একটা password use করতে হবে যা আপনার মনে থাকে এবং তা যত্ন সহ সংরক্ষন করুন। 

আপনার একটা account থেকেই আপনি আপনার নিজের ও আপনার পরিবারের সদস্যদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এবার আপনার আবেদন গুলো নির্ভয়ে আস্তে আস্তে সময় নিয়ে (প্রয়োজন হলে দুই তিন দিন ) পুরন করুন। এটা পুরন করতে গিয়ে প্রতিটা ষ্টেপে "Save and Continue" নির্ভয়ে চাপুন আর পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান। কেননা এখানে ভুল হলেও আপনি তা শুদ্ধ করার সুযোগ পাবেন। এভাবে একে একে আপনার সব গুলো আবেদন পত্র গুলো পুরন করুন। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন আবেদন পত্র পূরনের শেষ ধাপে "Confirm and Submit" অপশন আসবে। এই খানে ক্লিক করার আগে আপনি এতক্ষন যা পুরন করেছেন তা দাড়ি কমা সহ পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে চেক করে নিন। প্রয়োজন হলে এই ড্রাফটের একটা কপি প্রিন্ট করে নিয়ে ভালো ভাবে এর ইনফরমেশন গুলো যচাই করে নিন। আপনি এই অবস্থায় আপনার কম্পিউটার থেকে বেরিয়ে গেলেও অসুবিধা নেই । আপনার এতোক্ষন কাজের সব কিছুই সেইভ হয়ে থাকবে। 

সব কিছু ঠিক থাকলে "Confirm and Submit" বাটনে ক্লিক করুন। ব্যাস আপনার আবেদন এর কাজ শেষ। এই পর্যায়ে আপনার কাছে আপনি কবে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি উঠাবেন, আঙ্গুলের ছাপ দিবেন, চোখের আইরিশ ফিতে পারবেন তার এপয়েন্টমেন্ট এর শিডিউল চাইবে, তখন আপনি আপনার সুবিধামত এপয়েন্টম্যান্ট নিন। আর এই এপয়েন্টমেন্ট শিট এর একটি কপি প্রিন্ট করে নিন। এবার আপনার আবেদনের ৩ পাতার মুল কপিটি প্রিন্ট করে রাখুন।

নাম লেখার ব্যপারে অনেকেই একটা সমস্যায় ভুগেন যেমন কারো নাম যদি A.Z.M. ZUBAIDUR RAHMAN হয় তবে তিনি Sure Name এর ক্ষেত্রে লিখবেন RAHMAN আর Given Name এ লিখবেন AZM ZUBAIDUR এখানে কোন Dot বা ফোটা ব্যবহার করা যাবেনা। 

আর মনে রাখবেন আপনার শিক্ষা সার্টিফিকেটে আপনার নাম যেভাবেই লিখা থাকুক তাতে কিছুই আসে যায়না। আপনি আপনার আবেদনে নাম লিখবেন আপনার NID অনুযায়ী। 

এবার আপনি নির্দিষ্ট ব্যাংক কে আপনার পাসপোর্ট এর ফী জমা দিন। মনে রাখবেন আপনার আবেদনে যেভাবে নাম লিখেছেন ব্যাংক এর জমার স্লিপ এর নামও  ঠিক হুবুহু একই যেনো হয়। ব্যাংক এ টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক আপনাকে  এটা স্লিপ দিবে, যেখানে একটা রেফারেন্স নাম্বার থাকবে। এই রেফারেন্স নাম্বার টা আপনার মুল আবেদনের ৩য় পাতায় নির্ধারিত জায়গায় যত্নি নিয়ে নির্ভুলভাবে লিখুন। আর ৩য় পাতার নিচে আপনি সাক্ষর ও তারিখ দিন।

এবার পর্যায়ে ক্রমে উপর থেকে নিচের দিকে ব্যাংক জমার স্লিপ, এপয়েন্টমেন্ট লেটার, মুল আবেদন পত্র, নিজের NID এর কপি, পুরাতন পাসপোর্ট এর ফটোকপি, (যদি থাকে), স্ত্রী এর NID কপি, কাবিন নামার ফটোকপি একসাথে করে একটা সেট বানিয়ে স্টেপ্লার করে সংরক্ষন করুন আর নিশ্চিন্তে এপয়েন্টমেন্ট দিনের জন্য অপেক্ষা করুন।

দ্বিতীয় ধাপ: আগে থেকে নির্ধারণ করা তারিখে পাসপোর্ট অফিসে দেখা করবেন  সেই প্রিন্ট করা পত্রগুলো ও ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ নিয়ে। পরে বিভিন্ন ভাবে আবেদন পত্রগুলো ও জাতীয় পরিচয়পত্র চেক করে পত্রগুলোর উপর সীল মেরে দিয়ে একটি কক্ষে যেতে বলবে। সেখানে যাওয়ার পর ছবি তুলবে হাতের ফিঙ্গার প্রিন্ট ও চোখের লেন্স নেয়া হবে। পরে পাসপোর্ট  ভেলিভারির একটি স্লিপ দেওয়া হবে। পরে বাড়িতে পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। ও ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করা হবে। 

তৃতীয় ধাপ: পাসপোর্ট ভেলিভারি স্লিপের তারিখ অনুযায়ী আবার পাসপোর্ট অফিসে দেখা করবেন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট চেক করে ই-পাসপোর্ট বুঝিয়ে দেয়া হবে। 

বিশেষ দ্রষ্টব্য ও লক্ষনীয় বিষয়

১: কোন ভূল ও মিথ্যা তথ্য দিবেন না।

২: ভূল বা মিথ্যা ঠিকানা ব্যবহার করবেন না। 

৩: পাসপোর্ট সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে দ্রুত পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করবেন।

৪: পুলিশ ভেরিফিকেশনে ঘুষ চাইলে পাসপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক জানান।

৫: পাসপোর্ট অফিসে কোন সমস্যা হলে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী বা অন্য কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসীত করেন তারাই বলে দিবে আপনাকে কি করতে হবে কোন কক্ষে যেতে হবে। সুতরাং কারো সাথে অভদ্র আচরণ করবেন না। 

ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য যা প্রয়োজন: 

১: আপনার বাসার বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি

২: আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র

পুলিশ ভেরিফিকেশন যা দেখতে চাইতে পারে:

১: আপনার ও আপনার বাবা মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র

২: পাসপোর্ট আবেদনে যে পেশা দিয়েছেন তার প্রমাণ। যেমন ছাত্র দিলে ছাত্রত্বের আইডি কার্ড।

৩: বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি বা বিদ্যুৎ বিল কার্ডে রিচার্জ করলে কার্ডের ফটোকপি।

বিঃদ্রঃ লেখা বা তথ্য ভুল থাকলে আমাদেরকে অবগত করবেন।

Facebook group  SSC07, HSC09 থেকে সংগৃহীত, পোস্ট দাতাঃ  JAKUAN KHAN

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.