প্রযুক্তি

Type Here to Get Search Results !

মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) সংক্ষিপ্ত নিয়মাবলী

প্রিয় শিক্ষার্থী সামনে আপনাদের অনার্স ও মাস্টার্স ভাইভা পরীক্ষা ভাবছেন কিভাবে সামাল দিবেন? কোন দুঃশ্চিন্তা না করে আমাদের আর্টিকেলটা পড়ে নিন। ভাইভা জীবনের শুরু মাত্র। সামনে আরো অনেক ভাইভা আছে।

ভাইভা পরীক্ষার নিয়মাবলী

মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) সংক্ষিপ্ত নিয়মাবলী

মৌখিক পরীক্ষার ধরন: মৌখিক পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট কোন ধরন, প্রকৃতি বা রূপরেখা নেই। পরীক্ষকের মেজাজ, মর্জি ইচ্ছা-অনিচ্ছা, রীতিনীতি এবং নিয়মকানুনের উপর এ পরীক্ষার যাবতীয় কর্মতৎপরতা নির্ভরশীল। সাধারণত সাক্ষাৎকার বোর্ডে একাধিক পরীক্ষক উপস্থিত থাকেন। কোন বিষয়ের বা পত্রের প্রশ্ন দিয়ে সাক্ষাৎকার শুরু হবে তা আগে থেকে অনুমান করা সম্ভব নয়। পরীক্ষার্থীর আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বা তার নিজ দেশের কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি বা আন্ত জাতিক কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি সম্পর্কে পরীক্ষা শুরু হতে পারে।

মৌখিক পরীক্ষার্থীর কর্তব্য: মৌখিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা বোর্ডে মনোবল ও ধৈর্য ধরে সতর্ক থাকতে হবে যেন তিনি এমন ভুল উত্তর না দেন এবং ত্রুটিপূর্ণ আচরণ না করেন যাতে পরীক্ষকগণ তার প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করেন।

পরীক্ষার্থীর ত্রুটি: অনেক সময় দেখা যায় পরীক্ষার্থী কতকগুলো ভুল বা ত্রুটি করে থাকেন। এসব ত্রুটি তার অকৃতকার্যতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব ত্রুটির মধ্যে অন্যতম ক্রটিগুলো হলো:

  • ১. সাক্ষাৎকার কক্ষে প্রবেশ ও বিদায় নেয়ার সময় সালাম না দেয়া।
  • ২. জেনে ভুল উত্তর দেয়া এবং তা নিয়ে তর্ক করা।
  • ৩. নিজেকে জাহির করার মতো আচরণ করা।
  • ৪. আঙুলের নখ দাঁত দিয়ে কাটা।
  • ৫. পরীক্ষকগণকে প্রশ্ন করার সময় বাধা প্রদান করা।
  • ৬. অবিবেচকের মতো কথা বলা।
  • ৭. পরীক্ষকগণের প্রতি না তাকান।
  • ৮. প্রশ্নকর্তাকে অবহেলা করা।
  • ৯. হাতের ইশারায় বক্তব্য পেশ করা।
  • ১০. মুখ অপরিষ্কার রাখা এবং মুখ দিয়ে দুর্গন্ধ বের হওয়া।
  • ১১. এদিক-ওদিক তাকান।
  • ১২. মুখে কোনকিছু নিয়ে চিবান।
  • ১৩. না থেমে অনবরত কথা বলা।
  • ১৪. প্রশ্নের উত্তর দিতে বেশি সময় নেয়া।
  • ১৫. টেবিলের উপর হাত দিয়ে হিজিবিজি দাগ কাটা ইত্যাদি।

পোশাক পরিচ্ছদ: মৌখিক পরীক্ষার জন্য পোশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য উপযুক্ত পোশাক পরিধানের ব্যাপারে পরীক্ষার্থীকে সজাগ থাকতে হবে। এমন পোশাক পরা উচিত নয় যাতে তার ব্যক্তিত্বকে হালকা করে দেয়। তবে পোশাক অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে।

পরীক্ষকের সামনে জবাব দেয়ার পদ্ধতি: মৌখিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার্থীকে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এজন্য তার করণীয় অনেক যুক্তিযুক্ত কার্যাদি রয়েছে। যেমন:

  • ১. কক্ষে প্রবেশ করে পরীক্ষকগণের সামনে দাঁড়িয়ে সালাম দিতে হবে।
  • ২. সালাম দেয়ার পর পরীক্ষকগণ বসতে বললে বসতে হবে। নতুবা খানিকক্ষণ অনুমতি পাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থেকে অনুমতি না পেলে অনুমতি প্রার্থনা করতে হবে। অনুমতি পাওয়ার আগে কোনক্রমেই চেয়ারে বসা যাবে না।
  • ৩. প্রশ্নের জবাব শান্তভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে দিতে হবে।
  • ৪. যুক্তির সাথে বক্তব্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা উচিত।
  • ৫. বিনীতভাবে কথোপকথন করতে হবে।

অনেক সময় প্রার্থী জবাব দিতে অপারগ হলে পরীক্ষক সঠিক জবাবের দিকে ইঙ্গিত করেন এবং প্রার্থীর জানা বিষয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রার্থীকে সতর্ক হয়ে ইঙ্গিতের প্রতি নজর দিয়ে যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে সচেষ্ট হতে হবে।(alert-warning)

  • ৭. বিদায় নেয়ার সময় সালাম দিতে হবে।

সাধারণত একটি ভাইবা বোর্ডে চারজন পরীক্ষক থাকেন। এর মধ্যে দুজন হলেন অভ্যন্তরীণ পরীক্ষক এবং দুজন থাকেন বহিঃপরীক্ষক। অভ্যন্তরীণ পরীক্ষক হলেন স্ব-স্ব কলেজের সিনিয়র দুজন শিক্ষক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগকৃত দুজন হলেন বহিঃপরীক্ষক। ভাইবা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর জন্য একটি বসার স্থান নির্ধারিত থাকে। পরীক্ষার্থী একটি কলমসহ ভাইবা বোর্ডে প্রবেশ করবে।


একটি নমুনা ভাইভা

পরীক্ষার্থী: আসতে পারি স্যার?
পরীক্ষক: আসুন।
পরীক্ষার্থী: আস্সালামু আলাইকুম।
পরীক্ষক: ওয়ালাইকুম আস সালাম। এখানে বসুন এবং আপনার স্বাক্ষর করুন।
১ম পরীক্ষক: আপনার নাম কি?
পরীক্ষার্থী: আমার নাম মোঃ রফিকুল ইসলাম।
১ম পরীক্ষক: রফিক শব্দের অর্থ কী?
পরীক্ষার্থী: স্যার, রফিক শব্দের অর্থ হলো বন্ধু।
১ম পরীক্ষক: বাহ! সুন্দর। আপনার কলেজের নাম কী?
পরীক্ষার্থী: আমার কলেজের নাম নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ।
১ম পরীক্ষক: নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত?
পরীক্ষার্থী: ১৮৮৬ সালে জমিদার রতন চন্দ্র রায়ের পুত্র চন্দ্র রায় নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
২য় পরীক্ষক: স্নাতক সম্মান পর্যায়ে আপনি কোন কোন কোর্স পড়েছেন?
পরীক্ষার্থী: ইন্টারমিডিয়েট ব্যষ্টিক অর্থনীতি, মৌলিক গণিত, Business, Finance & Accounting, কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি, রাজনৈতিক সংগঠন এবং যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞান, বাংলাদেশ সমাজ ও সংস্কৃতি ও ইংরেজি।
২য় পরীক্ষক: কোন কোর্সটি আপনি ভালো বলতে পারবেন?
পরীক্ষার্থী: ইন্টারমিডিয়েট ব্যষ্টিক অর্থনীতি।
২য় পরীক্ষক: সম প্রান্তিক উপযোগ বিধির প্রবক্তা কে?
পরীক্ষার্থী: অধ্যাপক মার্শাল।
৩য় পরীক্ষক: AFC কি?
পরীক্ষার্থী: মোট স্থির ব্যয়কে উৎপাদনের পরিমাণ দ্বারা ভাগ করলে যা পাওয়া যায় তাই AFC.
৩য় পরীক্ষক: Shut down point for কি?
পরীক্ষার্থী: যে বিন্দুতে দ্রব্যের মূল্য গড় পরিবর্তনশীল ব্যয়ের সমান দেখায় সেটাই Shut down point.
৩য় পরীক্ষক: নিমজ্জিত খরচ কি?
পরীক্ষার্থী: উৎপাদন ক্ষেত্রে যে খরচ উৎপাদন বন্ধ করে দিলেও তোলা যায় না এমনকি উক্ত উপকরণ বিক্রয় করেও তার দাম তোলা না গেলে তাকে নিমজ্জিত খরচ বলে।
৩য় পরীক্ষক: শ্রম শোষণ কি?
পরীক্ষার্থী: পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে যখন শ্রমিকের শ্রমকে কেন্দ্র করে দ্রব্য উৎপাদন হয় অথচ শ্রমের ন্যায্য মূল্য দেয়া হয় না তখনই তাকে শ্রম শোষণ বলে।
৩য় পরীক্ষক: ভোক্তার উপযোগ পরিমাপের একক কি?
পরীক্ষার্থী: ইউটিল (Util).
৩য় পরীক্ষক: TP যখন সর্বোচ্চ হয় MP কেমন হয়?
পরীক্ষার্থী: MP তখন শূন্য (০) থাকে।
৩য় পরীক্ষক: উৎপাদনের উপকরণগুলো কি কি?
পরীক্ষার্থী: ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন।
৪র্থ পরীক্ষক: বিজ্ঞাপন ব্যয় কি?
পরীক্ষার্থী: পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য একটি ফার্মকে যে ব্যয় নির্বাহ করতে হয় তাকে বিজ্ঞাপন ব্যয় বলে।
৪র্থ পরীক্ষক: প্রান্তিক উপযোগ কী?
পরীক্ষার্থী: অতিরিক্ত এক একক দ্রব্য ভোগের ফলে মোট উপযোগের যে পরিবর্তন হয় তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে।
৪র্থ পরীক্ষক: শ্রমের যোগান কী?
পরীক্ষার্থী: একটি নির্দিষ্ট মজুরিতে যে পরিমাণ শ্রম পাওয়া যায় তাকে শ্রমের যোগান বলে।
৪র্থ পরীক্ষক: কোন বাজারে যোগান রেখা নেই?
পরীক্ষার্থী: একচেটিয়া বাজারে যোগান রেখা নেই।
৪র্থ পরীক্ষক: গণদ্রব্য কাকে বলে?
৪র্থ পরীক্ষক: গণদ্রব্য কাকে বলে?
পরীক্ষার্থী: গণদ্রব্য বলতে এমন দ্রব্য বুঝায় যেগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক প্রস্তুত করা হয় অথচ সমাজের সকল লোক তা সমভাবে ভোগ করতে পারে। একজনের ভোগ অপরজনকে ভোগ করা থেকে বঞ্চিত করে না।
৪র্থ পরীক্ষক: ঠিক আছে তুমি আসতে পার।
পরীক্ষার্থী: আস্সালামু আলাইকুম।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.