প্রযুক্তি

Type Here to Get Search Results !

কক্সবাজারে শিক্ষকরাও মাদক কারবারে জড়িত : র‌্যাব ডিজি


কক্সবাজার এলাকার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকরাও মাদকের কারবারে জড়িত বলে সংসদীয় কমিটিতে তথ্য দিয়েছেন র‌্যপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

গত ৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তিনি ওই তথ্য দেন বলে সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়। রোববার কমিটির সভায় ওই কার্যবিরণী অনুমোদন দেওয়া হয়। 

শিক্ষকদের মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার তথ্য তুলে ধরে র‌্যাব মহাপরিচালক সেদিন বৈঠকে বলেন, “স্থানীয় এই ব্যক্তিরা একে পার্টটাইম ব্যবসা হিসেবে মনে করেন।”

চলতি শতকের শুরু থেকে বাংলাদেশে মাদকের বাজারে ফেনসিডিল শীর্ষস্থান দখল করে নেশার বড়ি ইয়াবা। মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার হয়ে এই মাদক বাংলাদেশে ঢোকে, তারপর দেশের বিভিন্ন এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়ে। 

২০১৮ সালে মূলত ইয়াবা ঠেকানোর লক্ষ্য নিয়েই মাদকের বিরুদ্ধে বড় অভিযানে নেমেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে কয়েকশ সন্দেহভাজন।

মাদক ঠেকাতে সীমান্তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে র‌্যাবের ডিজি সেদিন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা রোধ করা ‘একটু কঠিন’ হলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ‘সদা সতর্ক’ রয়েছে।

মাদকসেবীরা প্রথমে শখের বসে মাদক সেবন করে এবং পরে মাদকাসক্ত হয়ে গেলে চোরাকারবারীরা তাদের খুচরা বিক্রেতা হিসেবে ব্যবহার করে বলে ওই সভায় মন্তব্য করেন র‌্যাবের ডিজি।

তিনি বলেন, সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, সকল শ্রেণির জনগণ একসাথে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কারণে সুন্দরবনের বনদস্যু ও জলদস্যুরা আত্মসমার্পণ করেছে। মাদকপাচারকারীদের জন্য এ ব্যবস্থা করা গেলে সফলতা আসবে।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববারের বৈঠকে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ডোপ টেস্ট চলমান থাকায় ধন্যবাদ জানিয়েছে কমিটি।

“এ প্রক্রিয়া আরো জোরদার করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলা কারাগারকে ডোপ টেস্টের আওতায় আনাসহ স্কুল ও কলেজের সামনে/গেইটে পান/সিগারেটের দোকানসহ অন্য কোনো দোকান যাতে স্থাপন না করতে পারে সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।”

বৈঠকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা পর্যায়ে মাদকবিরোধী সভা যা পর্যায়ক্রমে উপজেলায় সভা করারও সুপারিশ করেছে কমিটি।

বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, “মাদকের বিস্তার রোধে বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সেজন্য কমিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে যাতে চিঠি পাঠানো হয়। এসব দোকানে মাদক বিক্রি হয়। ইভটিজিংয়ের ঘটনাও ঘটে।”

বৈঠকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকল সরকারি সংস্থা/দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র-শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়মিত ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে হবে হবে’ বলে সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু বৈঠকে বলেন, “ডোপটেস্ট চালুর কারণে মাদকাসক্তরা ইদানিং সতর্ক হচ্ছে। এমপি-মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, বিচারপতি, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক সর্বক্ষেত্রে ডোপটেস্ট চালু রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। ডোপ টেস্টের কারণে সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে সমাজের সবাই সচেতন হবেন।”

শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং রুমানা আলী অংশ নেন।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.