প্রযুক্তি

Type Here to Get Search Results !

এসএসসি 2021 বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৪র্থ সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা


প্রিয় এসএসসি ২০২১ পরীক্ষার্থী বন্ধুরা তোমাদের এসএসসি ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর নিয়ে আবার তোমাদের মাঝে চলে এলাম। SSC 2021 ৪র্থ সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা বিয়ের নমুন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।

প্রিয় শিক্ষার্থী অ্যাসাইনমেন্ট সবসময় ইউনিক ও নিজের মতো করে লিখতে চেষ্টা করবে। আমরা সবসময় তোমাদের জন্য সর্বোত্তম উত্তরটি বাছাই করে দেওয়ার চেষ্টা করি। তোমরা তোমাদের উত্তরের সাথে মিলিয়ে নাও।

৪র্থ সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা নমুনা উত্তর

বিষয়: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা

বিষয় কোড: ১৫৩

অ্যাসাইনমেন্ট:

  • গ্রিক সভ্যতা ও রোমান সভ্যতার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপনপূর্বক অগ্রগতিতে উভয় সভ্যতার অবদান মূল্যায়ন।

শিখনফল/বিষয়বস্তু:

  • ভৌগলিক অবস্থান ও সময়কাল বর্ণনাপূর্বক গ্রিক সভ্যতা উদ্ভবের পটভূমি বর্ণনা করতে পারবে।
  • বিশ্বসভ্যতার অগ্রপতিতে গ্রিক সভ্যতার শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের অবদান বর্ণনা করতে পারবে;
  • ভৌগোলিক অবস্থান ও সময়কাল উল্লেখপূর্বক প্রাচীন রোমান সভ্যতা বর্ণনা করতে পারবে।
  • শিক্ষা, সাহিত্য ও লিখন পদ্ধতির বিকাশে প্রাচীন রোমান সভ্যতার অবদান বিশ্লেষণ করতে পারবে।
  • সভাতার বিকালে প্রাচীন রোমান সভ্যতার স্থাপিত ভাস্কর্য ও বিজ্ঞানের অবদান বর্ণনা করতে পারবে।
বোর্ড কর্তৃক প্রণিত অ্যাসাইনমেন্ট চিত্র-
এসএসসি ৪র্থ সপ্তাহ বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা

(ক) নং প্রশ্নের উত্তর

উত্তর: পটভূমিঃ

গ্রিক সভ্যতা: মহাকবি হোমারের বিখ্যাত মহাকাব্য ইলিয়াড ও ওডিসি- তে তিনি প্রাচীন গ্রিসের যে কাহিনীগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন তাতে ঐতিহাসিকগণ নড়ে-চড়ে বসেন। 

হোমারের কাহিনীকে শুধু কাহিনী না ভেবে এর ভেতরের সত্যতা খুঁজতে শুরু করেন। প্রত্নতত্ত্ববিদদের অক্লান্ত চেষ্টায় উন্মুক্ত হয় গ্রিক সভ্যতার সঠিক ইতিহাস। ইজিয়ান সাগরের দ্বীপপুঞ্জে এবং এশিয়া মাইনরের পশ্চিম উপকূলে আবিষ্কৃত হয় এক উন্নততর প্রাচীন নগর সভ্যতা। সন্ধান মেলে মহাকাব্যের ট্রয় নগরীসহ একশত নগরীর ধ্বংস স্তুপের। যাকে বলা হয় ঈজিয়ান সভ্যতা বা প্রাক ক্লাসিক্যাল গ্রিক সভ্যতা।

এই সভ্যতার অধিকাসীরা ছিল সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের অধিকারী। সভ্যতাটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

  • ১। মিনিয়ন সভ্যতা: খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে ১৪০০ পর্যন্ত সময়কালকে মিনিয়ন সভ্যতার স্থায়ীত্ব ধরা হয়।
  • ২। ইজিয়ান সভ্যতা: খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১১০০ পর্যন্ত সময়কালকে ইজিয়ান সভ্যতার স্থায়ীত্ব ধরা হয়।

রোমান সভ্যতা: ইতালির খরস্রোতা টাইবার নদীর তীরে ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা সাতটি পাহাড়ের আশে পাশে বিক্ষিপ্তভাবে মানুষ বসবাস করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে এই বাসস্থানগুলো মিলে একটি নগরি গড়ে ওঠে। এই নগর রাষ্ট্রটি ক্রমেই বেড়ে চলল এবং বিস্তার লাভ করতে করতে পরিণত হয় এক বিশাল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে। 

রোমকে কেন্দ্র করে এই সুবিশাল সাম্রাজ্য ও সভ্যতা গড়ে ওঠে বলে ইতিহাসে এটি রোমান সভ্যতা নামে পরিচিত। সে সময়ের প্রথম দিকে রোমের শাসনভার ছিল একজন রাজার অধীনে। তখন একটি সভা ও সিনেট ছিল। রাজার স্বেচ্ছাচারিতার জন্য তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ৫১০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। রোমান সভ্যতা প্রায় ৬০০ বছর স্থায়ী হয়েছিল।

 

(খ) নং প্রশ্নের উত্তরঃ

গ্রিক সভ্যতা ও রোমান সভ্যতার ভৌগলিক অবস্থান ও সময়কালের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিচে ছকে দেখানো হলো-

ভৌগলিক অবস্থান ও সময়কালসাদৃশ্যবৈসাদৃশ্য
১। ভৌগলিক অবস্থান:গ্রিক সভ্যতা:
আড্রিয়াটিক সাগর, ভূমধ্যসাগর ও ইজিয়ান সাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত।

রোম সভ্যতা:
রোমকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলেও এই সভ্যতা ভূমধ্যসাগর থেকে উত্তর দিকে আঙ্কস পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃতি ছিল এবং আড্রিয়াটিক সাগরের উত্তর-পূর্ব অংশে এবং পশ্চিমাংশে রোমান সভ্যতার বিস্তৃতি হয়।
গ্রিক সভ্যতা:
ইজিয়ান সাগরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে গড়ে ওঠে গ্রিক সভ্যতা। অর্থাৎ গ্রিস ছিল দ্বীপ রাষ্ট্র।

রোম সভ্যতা:
ছোট ছোট নগর একত্রিত হয়ে রোম সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে। অর্থাৎ রোম ছিল নগর রাষ্ট্র।
২। সময়কাল:গ্রিক সভ্যতা:
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীতে শুরু হয়ে খ্রিস্টপূর্ব ৫২৫ পর্যন্ত ছিল এর স্থায়ীত্বকাল।

রোম সভ্যতা:
খ্রিস্টপূর্ব ৭৫৩ থেকে ৪৭৬ পর্যন্ত এই সভ্যতা স্থায়ীত্ব ছিল।
গ্রিক সভ্যতা রোমান সভ্যতার তুলনায় প্রাচীন ছিল এবং গ্রিক সভ্যতার অবসানের আগেই রোমান সভ্যতার সূচনা হয়।

(গ) নং প্রশ্নের উত্তরঃ

শিক্ষা, সাহিত্য ও দর্শনের ক্ষেত্রে গ্রিক ও রোমান সভ্যতার তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য:

গ্রিক সভ্যতা:

শিক্ষা: গ্রিক জ্ঞানী-গুণীরা নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। সুশিক্ষিত নাগরিকের হাতেই শাসনভার দেয়ার পক্ষে ছিলেন অনেকেই। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল আনুগত্য ও শৃঙ্খলা শিক্ষা দেয়া। স্বাধীন গ্রামবাসীর সাত বছর বয়স থেকে ছেলেরা পাঠশালায় যেত। ধনী ব্যক্তিদের ছেলেদের ১৮ বছর পর্যন্ত লেখাপড়া করতে হতো। কারিগর আর কৃষকের ছেলেরা প্রাথমিক শিক্ষা পেত। দাসদের সন্তানের জন্য বিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। মেয়েরাও কোনো প্রতিষ্ঠানের পড়ার সুযোগ পেত না।

সাহত্যি: সাহিত্যে গ্রিকদের অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। মহাকবি হোমার রচিত 'ইলিয়াড ও ওডিসি' বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম সম্পদ বলে বিবেচিত হয়। নাটক রচনায় গ্রিকরা ছিল পারদর্শী। গ্রিক নাট্যকার এসকাইলাসকে ট্রাজেডি নাটকের জনক বলা হয়। গ্রিসের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ছিলেন সোফোক্লিস। ইতিহাস রচনায়ও গ্রিকরা কৃতিত্ব দেখিয়েছিল। হেরোডটাসকে ইতিহাসের জনক বলা হয়।

দর্শন: দর্শনশাস্ত্রে গ্রিকরা ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। পৃথিবী কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে, প্রতিদিন কীভাবে এর পরিবর্তন ঘটছে- এসব ভাবতে গিয়ে গ্রিসে দর্শনচর্চার সূত্রপাত। থালেস ছিলেন প্রথম গ্রিক দার্শনিক। তিনিই প্রথম সূর্যগ্রহণের প্রাকৃতিক কারণ ব্যাখ্যা করেন। সক্রেটিস ছিলেন গ্রিসের সবচেয়ে বিখ্যাত দার্শনিক। তার শিক্ষার মূল দিক ছিল আদর্শ রাষ্ট্র ও সৎ নাগরিক গড়ে তোলা। সক্রেটিসের শিষ্য প্লেটো গ্রিক দর্শনকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যান। প্লেটোর শিষ্য এরিস্টটলও একজন বড় দার্শনিক ছিলেন।

রোমান সভ্যতাঃ

শিক্ষা ও সাহিত্য: সে সময় শিক্ষা বলতে বুঝাতো খেলাধূলা ও বীরদের স্মৃতিকথা বর্ণনা করা। তাদের সবকিছুই ছিল যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। উচ্চ শ্রেণিভুক্ত রোমানদের গ্রিক ভাষা শিক্ষা ছিল একটি ফ্যাশন। সে যুগে সাহিত্যের অবদানের জন্য পুটাস ও টেরেন্সর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অগাস্টাস সিজারের যুগে হোরাস ও ভার্জিল যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ওভিদ ও লিভি এ যুগের খ্যাতনামা কবি ছিলেন।

দর্শন: রোমের দর্শন গ্রিকদের অনুকরণে তৈরি হলেও রোমান দর্শনে সিসেরো, লুক্রেটিয়াস তাঁদের সুচিন্তিত মতবাদ দ্বারা অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। রোমে স্টোইকবাদী দর্শন যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। ১৪০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ রোডস দ্বীপের প্যানেটিয়াস এই মতবাদ রোমে প্রথম প্রচার করেন।

 

(ঘ) নং প্রশ্নের উত্তর:

স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও বিজ্ঞানে সভ্যতা দুটির অগ্রগতি:

গ্রিক সভ্যতাঃ

বিজ্ঞান: গ্রিকরা প্রথম বিজ্ঞানচর্চার সূত্রপাত করেন খ্রীস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে। গ্রিকরাই প্রথম পৃথিবীর মানচিত্র অঙ্কন করেন। তারাই প্রথম প্রমাণ করেন যে, পৃথিবী একটি গ্রহ এবং তা নিজ অক্ষে আবর্তিত হচ্ছে। সূর্যগ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণের কারন নির্ণয়, চাঁদের নিজস্ব আলো নেই ইত্যাদি গ্রিকদের উদ্ভাবন। ইউক্লিড, পিথাগোরাস, হিপোক্রেটস বিজ্ঞানে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন।

স্থাপত্য ও ভাস্কর্য: স্থাপত্য ও ভাস্কর্যে গ্রিকরা ছিল উন্নত। গ্রিক চিত্রশিল্পের নিদর্শন তাদের মৃৎপাত্রে আঁকা চিত্রে দেখা যায়। আর স্থাপত্যের সুন্দর সুন্দর নিদর্শন গ্রিসের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বড় বড় স্তম্ভের উপর তারা প্রাসাদ তৈরি করত। প্রাসাদের স্তম্ভগুলি থাকত অপূর্ব কারুকার্যমন্ডিত। পার্থেনন মন্দির বা দেবী এথেনার স্থাপত্য কীর্তির অন্যতম নিদর্শন। এথেন্সের অ্যাক্রোপলিসে স্থাপত্যের সুন্দর নিদর্শনের ভগ্নাবশেষ এখনও চোখে পড়ে।

রোমান সভ্যতা:

স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও বিজ্ঞান: রোমান স্থাপত্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এর বিশালতা। সম্রাট হার্ডিয়ানের তৈরি ধর্মমন্দির প্যানথিয়ন রোমানদের স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন। সম্রাট হার্ডিয়ানের তৈরি ধর্মমন্দির প্যানথিয়ন রোমানদের স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন। ৮০ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট টিটাস কর্তৃক নির্মিত কলোসিয়াম নাট্যশালায় একসাথে ৫৬০০ দর্শক বসতে পারত। স্থাপত্যকলার পাশাপাশি রোমীয় ভাস্কর্যের চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। রোমান ভাস্করগণ দেবদেবী, সম্রাট, দৈত্য, পুরাণের বিভিন্ন চরিত্রের মূর্তি তৈরি করতেন মার্বেল পাথরে।

বিজ্ঞানে রোমানদের তেমন অবদান না থাকলেও প্লিনি বিজ্ঞান বিশ্বকোষ প্রণয়ন করেছিলেন যেখানে পাঁচশ বিজ্ঞানীর গবেষণাকর্ম স্থান পেয়েছে। বিজ্ঞানী সেলসাস ও গ্যালেন রুফাসে চিকিৎসা শাস্ত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমাদের ফেইজবুক পেইজে লাইক দিতে নিচের বাটনে ক্লিক করার জন্য অনুরোধ করছি। 

E-VISION BD's Facebook Page(link)

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.