প্রিয় শিক্ষার্থী তোমাদের পঞ্চম সপ্তাহের সকল বিষয়ের নমুনা উত্তর আমাদের সাইটে দেওয়া হলো। খুজে নাও তোমার প্রয়োজনীয় সমাধানটি।
৫ম সপ্তাহের পৌরনীতি ও নাগরিকতা নমুনা উত্তর নিচে-
বিষয়ঃ পৌরনীতি ও নাগরিকতা
বিষয় কোডঃ ১৪০
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর
রাষ্ট্রের ধরনঃ
অর্থনৈতিক ভিত্তিতে রাষ্ট্র ২ প্রকার হয়
যেমন: ১. পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ২. সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র
পুঁজিবাদী রাষ্ট্রঃ
পুঁজিবাদী রাষ্ট্র বলতে সেই রাষ্ট্রকে বোঝায়, যেখানে সম্পত্তির উপর নাগরিকদের ব্যক্তিগত মালিকানা স্বীকার করা হয়। এ সরকারব্যবস্থায় উৎপাদনের উপাদানসমূহ (ভূমি, শ্রম, মূলধন ও ব্যবস্থাপনা) ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকে। এর উপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এ ধরনের রাষ্ট্রে নাগরিকগণ সম্পদের মালিকানা ও ভোগের ক্ষেত্রে স্বাধীন। বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রই পুঁজিবাদী রাষ্ট্র।
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রঃ
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে সেই ধরনের রাষ্ট্রকে বোঝায়, যা ব্যক্তিমালিকানা স্বীকার করে না। এতে উৎপাদনের উপকরণগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকে। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এটি পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের বিপরীত।
একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাঃ
একনায়কতন্ত্র এক ধরনের স্বেচ্ছাচারী শাসন ব্যবস্থা। এতে রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত না থেকে একজন স্বেচ্ছাচারী শাসক বা দল বা শ্রেণির হাতে ন্যস্ত থাকে। এতে নেতাই দলের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
এছাড়াও, আরো কয়েক প্রকার রাষ্ট্র রয়েছে। নিচে ছকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রের রুপ তুলে ধরা হলোঃ
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর
গণতন্ত্র সফল করার উপায়ঃ
গণতন্ত্র বর্তমান যুগে প্রচলিত শাসন ব্যবস্থাও গণতন্ত্র বর্তমান যুগে প্রচলিত ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট এবং সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য শাসনব্যবস্থা। কিন্তু এর চর্চা বা বাস্তবায়নের পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করে গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত ও সচেতন জনগোষ্ঠী, অর্থনৈতিক সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, দক্ষ প্রশাসন এবং উপযুক্ত নেতৃত্ব।
এছাড়া আরও প্রয়োজন পরমতসহিষ্ণুতা, আইনের শাসন, মুক্ত ও স্বাধীন প্রচারযন্ত্র, একাধিক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক সহনশীলতা। তবে সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়েজন তা হলো, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হওয়া। তাদেরকে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক আচরণ করতে হবে।
এজন্য যা করা প্রয়োজন তা হলো-
সবাইকে মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করতে হবে এবং অধিকাংশের মতামতকে সবার মতামত হিসেবে মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। নিজের বা নিজ দলীয় মতামত জোর করে অন্যদের উপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থপরতা পরিহার করতে হবে। এটি সকল নাগরিক ও রাজনৈতিক দলের জন্য প্রযােজ্য। কেবল বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করলে হবে না। দেশের মঙ্গলকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে হবে।
নিজের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি অন্যের অধিকারকে সম্মান করতে হবে। নিজের অধিকার আদায় যেন অন্যের অধিকার ভঙ্গের কারণ না হয়, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং দলের মধ্যে সম্প্রীতি, সহযোগিতা ও সহনশীলতা বজায় রাখতে হবে।
ব্যক্তিস্বাতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সেই সাথে নাগরিকদের সুনাগরিকের গুণাবলি অর্জন করতে হবে। নাগরিকদের হতে হবে বুদ্ধিমান, আত্মসংযমী ও বিবেকবান।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর
সংসদীয় সরকারের গুণ ও ক্রটিঃ
সংসদীয় সরকারের গুণঃ
সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের যেসব গুণ রয়েছে তা নিম্নরূপ-
১. দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা: সংসদীয় সরকার দায়িত্বশীল সরকার। এতে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল উভয়ই তাদের কাজের জন্য জনগণের নিকট দায়ী থাকে।
২. আইন ও শাসন বিভাগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক: শাসন বিভাগের সদস্যগণ আইনসভার সদস্য হওয়ায় এ সরকারে আইন ও শাসন বিভাগের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে।
৩. বিরোধী দলের মর্যাদা: এ সরকার ব্যবস্থায় বিরোধী দলকে বিকল্প সরকার মনে করা হয়। ফলে জাতীয় সংকটে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল একসাথে আলাপ - আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারে। বিরোধী দল হচ্ছে সংসদীয় ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
8. সমালোচনার সুযোগ: এ সরকারে সংসদ সদস্যগণ বিশেষ করে বিরোধী দলের সদস্যগণ সংসদে বসে সরকারের কাজের সমালোচনা করার সুযোগ পায়। ফলে সরকার তার কাজে সংযত হয় ও ভালো কাজ করার চেষ্টা করে।
৫. রাজনৈতিক শিক্ষা দেয়: সংসদীয় সরকার জনমতের দ্বারা পরিচালিত হয়। জনমতকে অনুকূলে রাখার জন্য তাই সরকারি ও বিরোধী দল সবসময় তৎপর থাকে। সংসদে বিতর্ক হয়, এতে জনগণ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়।
সংসদীয় সরকারের ক্রটিঃ
সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের কিছু ত্রুটি রয়েছে। যথা-
১. স্থিতিশীলতার অভাব: সংসদীয় সরকার অস্থিতিশীল হতে পারে। মন্ত্রিসভা আইনসভার আস্থা হারালে অথবা সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার হেরফের হলে সরকারের পতন ঘটে। এ ধরনের পরিস্থিতি দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
২. ক্ষমতার অবিভাজন: এ ধরনের সরকারে শাসন ও আইন প্রণয়ন ক্ষমতা একই স্থানে তথা মন্ত্রিপরিষদের হাতে থাকে বলে মন্ত্রীগণ স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে। এ জন্য সংসদীয় সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বৈরাচার বলে আখ্যায়িত করা যায়।
৩. অতি দলীয় মনোভাব: সংসদীয় সরকার মূলত দলীয় সরকার। এতে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার উপর সরকারের গঠন ও স্থায়িত্ব নির্ভর করে। ফলে দলকে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে জাতীয় স্বার্থ ব্যাহত হয়।
৪. সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব: এখানে যেকোন বিষয়ে বহু আলােচনা ও পরামর্শের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে দেরি হয়।
Post a Comment
0 Comments