প্রযুক্তি

Type Here to Get Search Results !

ক্রিস্টোফার কলম্বাস এর জীবনী (1451-1506)

ক্রিস্টোফারকলম্বাস এর জীবনী

ইতালির জেনোয়া শহরে কলম্বাসের জন্ম। সঠিক দিনটি জানা যায় না। তবে অনুমান ১৪৫১ সালের আগষ্ট থেকে অক্টোবর, এর মধ্যে কোন এক দিনে জন্ম হয়েছিল কলম্বাসের। বাবা ছিলেন তন্তুবায়। কাপড়ের ব্যবসা ছিল তার। সেই সূত্রেই কলম্বাস জানতে পেরেছিলেন প্রাচ্য দেশের উৎকৃষ্ট পোশাক, নানান মশলা, অফুরন্ত ধনসম্পদের কথা।

ক্রিস্টোফার কলম্বাস এর জীবনী (1451-1506)

সেই ছেলেবেলা থেকেই মনে মনে স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে জাহাজ নিয়ে পাড়ি দেবেন ভারতবর্ষে। জাহাজ বোঝাই করে বয়ে নিয়ে আসবেন হীরে মণি মুক্তা মাণিক্য।

কলম্বাস ছিলেন কঠোর পরিশ্রমী, অধ্যাবসায়ী। কিন্তু অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে ভাগ্য ছিল নিতান্তই প্রতিকূল। তাই অতিকষ্টে জীবন ধারণ করতেন কলম্বাস। কলম্বাসের ভাই তখন লিসবন শহরে বাস করতেন। ভাই এর কাছ থেকে ডাক পেয়ে কলম্বাস লিসবন শহরে গিয়ে বাসা বাধলেন। কলম্বাসের বয়স তখন আটাশ বছর।

অল্পদিনের মধ্যেই ছোটখাট একটা কাজও জুটে গেল। কাজের অবসরে মাঝে মাঝে গীর্জায় যেতেন। একদিন সেখানে পরিচয় হল ফেলিপা মোঞিস দ্যা পেরেস্ত্রেল্লো নামে এক তরুণীর সাথে। ফেলিপার বাবা বার্থলোমিউ ছিলেন সম্রাট হেনরির নৌবাহিনীর এক উচ্চ পদস্থ অফিসার।

কলম্বাসের জীবনে এই পরিচয় এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। পরিচয় পর্ব অল্পদিনেই অনুরাগে পরিণত হল। তারপর বিবাহ। বিবাহের পর কলম্বাস শ্বশুরের গৃহেই থাকতেন। শশুরের কাছে শুনতেন তার প্রথম যৌবনের সমুদ্র অভিযানের সব রোমাঞ্চকর কাহিনী। অন্য সময় লাইব্রেরী ঘরে বসে পড়তেন দেশ-বিদেশের নানান ভ্রমণ কাহিনী। এই সময়ে একদিন তার হাতে এল মার্কো পোলোর চীন ভ্রমণের ইতিবৃত্ত। পড়তে পড়তে মনের মধ্যে প্রাচ্য দেশে যাবার স্বপ্ন নতুন করে জেগে উঠল।

এর পেছনে কাজ করছিল দুটি শক্তি। রোমাঞ্চকর অভিযানের দুরন্ত আকাঙ্খা, দ্বিতীয়ত স্বর্ণতৃষ্ণা। তখন মানুষের ধারণা ছিল প্রাচ্য দেশের পথে ঘাটে ছড়িয়ে আছে সোনা-রূপা। সে দেশের মানুষের কাছে তার কোন মূল্যই নেই। ইচ্ছা করলেই তা জাহাজ বোঝাই করে আনা যায়।

>>আলবার্ট আইনস্টাইন

কলম্বাস চিঠি লিখলেন সে যুগের বিখ্যাত ভূগোলবিদ Pagolo Toscaneli কে। Pagolo কলম্বাসের চিঠির জবাবে লিখলেন- “তোমার মনের ইচ্ছার কথা জেনে আনন্দিত হলাম। আমার তৈরি সমুদ্র পথের একটা নকসা পাঠালাম। যদিও এই নকশা নির্ভুল নয়, তবুও এই নকশার সাহায্যে প্রাচ্যের পথে পৌঁছতে পারবে। যেখানে ছড়িয়ে আছে অফুরন্ত হীরে জহরৎ সোনা রূপা মণি মুক্তা মানিক্য।

এই চিঠি পেয়ে কলম্বাসের মন থেকে সব সংশয় সন্দেহ দুর হয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল তার যাত্রার প্রস্তুতি। কলম্বাসের ইচ্ছার কথা শুনে সকলে অবাস্তব অসম্ভব বলে উড়িয়ে দিল। অনেকে তাকে উপহাস করল। কেউ কেউ তাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতেও ছাড়ল না। একটি মানুষও এগিয়ে এল না তার সমর্থনে বা সাহায্যে।

কলম্বাসের অনুরোধে স্পেনের রাণী ইসাবেলা সহৃদয় বিবেচনা আশ্বাস দিলেও সম্রাট ফার্দিনান্দ সরাসরি প্রত্যাখান করলেন। ইতিমধ্যে কলম্বাসের স্ত্রী ফেলিপা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। সমস্ত চিকিৎসা সত্ত্বেও অসুথ ক্রমশই গুরুতর হয়ে উঠল। দূর প্রাচ্য অভিযানে পরিকল্পনা স্থগিত রাখতে হল। কিছুদিন পর মারা গেলেন ফেলিপা।

কলম্বাসের দাবি ছিল যে দেশ আবিষ্কার হবে, তাকে সেই দেশের ভাইসরয় করতে হবে আর রাজস্বের একটা অংশ দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে দু-একজন সম্মতি দিলেও কলম্বাসের দাবির কথা শুনে সকলেই তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করলেন।

কলম্বাসের সাথে এই সময় একদিন পরিচয় হল ফাদার পিরেজ এর। ফাদার পিরেজ ছিলেন রাজ পরিবারের অন্তরঙ্গ বন্ধু এবং রাণী ইসাবেলা তাকে অত্যন্ত সম্মান করতেন।

কলম্বাসের ইচ্ছার কথা ফাদার নিজেই রাণী ইসাবেলাকে বললেন। অনুরোধ করলেন যদি তাকে কোনভাবে সাহায্য করা যায়। ফাদারের অনুরোধ প্রত্যাখান করতে পারলেন না রাণী। নতুন দেশ আবিষ্কারের সাথে সাথে বহু মানুষকে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করার পূণ্য অর্জন করা যাবে। ফাদার পিরেজ ছাড়াও আরো কয়েকজন সহৃদয় ব্যক্তি কলম্বাসের সমর্থনে এগিয়ে এলেন।

কলম্বাসের সব অনুরোধ স্বীকার করে নিলেন সম্রাট। ১৭ই এপ্রিল, ১৪৯২ তাদের মধ্যে চুক্তি হল। কলম্বাসকে নতুন দেশের শাসনভার দেওয়া হবে আর অর্জিত সম্পদের এক দশমাংশ অর্থ দেওয়া হবে।

সম্রাটের কাছ থেকে অর্থ পেয়ে তিনখানা জাহাজ নির্মাণ করলেন কলম্বাস। সবচেয়ে বড় ১০০ টনের সান্তামারিয়া, পিন্টা ৫০ টন, নিনা ৪০ টন। জাহাজ তৈরির সময় কোন বিঘ্ন দেখা গেল না। সমস্যা সৃষ্টি হল নাবিক সংগ্রহের সময়। কলম্বাসের সাহায্যে এগিয়ে এল পিনজন ভাইরা। তাদের সাথে আরো কিছু বিশিষ্ট লোকের চেষ্টায় সর্বমোট ৮৭ জন নাবিক পাওয়া গেল।

অবশেষে ৩ আগষ্ট, ১৪৯২ কলম্বাস তার তিনটি জাহাজ নিয়ে পাড়ি দিলেন অজানা সমুদ্রে। সেদিন বন্দরে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের অধিকাংশই ভেবেছিলেন কেউই আর অজানা দেশ থেকে ফিরে আসবেন না।

ভেসে চললেন কলম্বাস। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। দিনের পর দিন অতিক্রান্ত হয়। কোথাও স্থলেনর দেখা নেই, অধৈর্য হয়ে ওঠে নাবিকরা। সকলকে সান্ত্বন


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.