যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন পদ্ধতি - United States Midterm Election
মধ্যবর্তীনির্বাচন কী?
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রকৃতপক্ষে একটি সাধারণ নির্বাচন। দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই বছর পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বলে একে মধ্যবর্তী নির্বাচন বলা হয়। মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সকল আসনে এবং উচ্চকক্ষ সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনে এই নির্বাচন হয়। এছাড়াও এই সময়ে কিছু অঙ্গরাজ্যের আইনসভার কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে এই নির্বাচনে নিম্নকক্ষ বা কংগ্রেস এবং উচ্চকক্ষ সিনেট নির্বাচনের গুরুত্ব বেশি কারণ এই দুটি কক্ষের সঙ্গে সরকারের নীতি ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই মধ্যবর্তী নির্বাচনকে অনেকেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব মূল্যায়নের একটা গণভোট হিসেবে মনে করেন।
নির্বাচন কেন মঙ্গলবার?
যুক্তরাষ্ট্রের
ইতিহাসে প্রথম ৬৯ বছর নির্বাচনের জন্য কোনো আলাদা দিন নির্দিষ্ট ছিল না। ডিসেম্বর মাসের
প্রথম বুধবারের আগের ৩৪ দিনের যেকোনো সময় রাজ্যগুলো ভোটাভুটি করতে পারত। কিন্তু আগাম
ফলাফল জেনে যাওয়ার কারণে, যেসব রাজ্যে পরে নির্বাচন হতো সেখানে প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা
দেখা দিত। এর ফলে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিত, তা ঠেকাতে ১৮৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে
একটি বিল পাস হয়, যেখানে নির্ধারণ করে দেওয়া হয় যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হবে নভেম্বর মাসের প্রথম মঙ্গলবার। কিন্তু নভেম্বর মাসের মঙ্গলবারেই কেন? ইতিহাসবিদ
ইভান অ্যান্ড্রুসের তথ্য অনুযায়ী, সেই সময়ে বেশিরভাগ মার্কিন কৃষিকাজ করত এবং নির্বাচন
কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে বসবাস করত। রবিবার সবাই গির্জায় সময় কাটাতো আর বুধবার ছিল
কৃষকদের বাজারের দিন। এ কারণে মঙ্গলবার নির্ধারণ করা হয় যাতে কৃষকরা রবিবারের কর প্রার্থনার
পর সোমবার ভোটের জন্য রওনা দিতে পারেন। আবার মঙ্গলবার ভোট দিয়ে তারা হাট করে ফিরতে
পারেন।
ক্যাপিটল হিল
মার্কিন
কংগ্রেস ভবন ‘ক্যাপিটল’ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন
ডিসির ক্যাপিটল হিলে অবস্থিত। ১৭৯০ সালে কংগ্রেসে এটি নির্মাণের আইন পাস হয় এবং ১৭৯১
সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন ক্যাপিটল হিলের জন্য এ জায়গাটির অনুমোদন দেন। ১৮
সেপ্টেম্বর ১৭৯৩ ক্যাপিটল হিলের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়। এর স্থপতি উইলিয়াম থর্টন।
১৮০০ সালে এ ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের কার্যক্রম শুরু হয়।
যৌথঅধিবেশন
কংগ্রেসের
যৌথ অধিবেশন বলতে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার সকল সদস্যের সম্মিলিত বৈঠককে বোঝায়। নতুন
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিষেকের পর, প্রেসিডেন্টের বার্ষিক স্টেট হিসাবে ইলেক্টোরাল
কলেজের আনুষ্ঠানিক ভোট গণনার জন্য যৌথ অধিবেশন আহ্বান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রথা
অনুযায়ী, শপথ গ্রহণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে
বক্তব্য দেন।
কংগ্রেসে
যৌথ অধিবেশনে পদাধিকারবলে সভাপতিত্ব করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে
জো বাইডেনই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি ২৮ এপ্রিল ২০২১ দু'জন নারী নেত্রীকে পেছনে রেখে
জাতির সামনে কংগ্রেসে বক্তৃতা করেন। তখন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস যৌথ অধিবেশনে
পদাধিকারবলে সভাপতিত্ব করেন। আর প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি প্রেসিডেন্টকে
কংগ্রেসে বক্তৃতার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
স্পিকার
যুক্তরাষ্ট্রের
প্রতিনিধি সভার সভাপতিকে স্পিকার বলা হয়। মার্কিন সংবিধান অনুসারে প্রতিনিধি সভার
নব-নির্বাচিত সদস্যগণ নিজেদের মধ্যে থেকে একজনকে স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত করেন। অধিবেশনে
তিনিই সভাপতিত্ব করেন। তিনি দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তবে তার দল পুনরায় প্রতিনিধি
সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলে তিনি পুনর্নির্বাচিত হতে পারেন।
কংগ্রেস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আইনসভার নাম কংগ্রেস। কংগ্রেস একটি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা। আইন প্রণয়ন করাই এর প্রধান কাজ। এছাড়া মার্কিন কংগ্রেস দেশটির নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের কার্য তদন্ত করাসহ সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্যাটাগরি | নিম্নকক্ষ | উচ্চকক্ষ |
---|---|---|
ইংরেজি | House of Representatives | Senate |
বাংলায় | প্রতিনিধি পরিষদ | সিনেট |
সদস্য | ৪৩৫ | ১০০ |
পদবি | কংগ্রেসম্যান | সিনেটর |
প্রার্থী হওয়ার বয়স | ২৫ বছর | ৩০ বছর |
প্রার্থীতার জন্য ন্যূনতম বসবাস | ৭ বছর | ৯ বছর |
মেয়াদকাল | ২ বছর | ৬ বছর |
Post a Comment
0 Comments